মঙ্গলবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৫:১৯ পূর্বাহ্ন

দৃষ্টি দিন:
সম্মানিত পাঠক, আপনাদের স্বাগত জানাচ্ছি। প্রতিমুহূর্তের সংবাদ জানতে ভিজিট করুন -www.coxsbazarvoice.com, আর নতুন নতুন ভিডিও পেতে সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল Cox's Bazar Voice. ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে শেয়ার করুন এবং কমেন্ট করুন। ধন্যবাদ।

সীমান্তের ওপারে তীব্র লড়াই :আরাকান আর্মির দখলে তুমব্রু পুলিশ ফাঁড়ি: বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে ১৪ বিজিপি সদস্য

মিয়ানমার সীমান্ত, ফাইল ছবি

বিশেষ প্রতিনিধি:

বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি ও কক্সবাজারের উখিয়া সীমান্তের ওপারে মুহুর্মুহু গোলাগুলি ও মর্টার শেল যুদ্ধে প্রকম্পিত হলো এপারের বেশ কয়েকটি গ্রাম। রাতভর যুদ্ধের পর মিয়ানমার বর্ডার গার্ড পুলিশের ফাঁড়ি দখলে নিয়েছে আরাকান আর্মির যোদ্ধারা। এসময় মিয়ানমার পুলিবর্ডার গার্ডশের ১৪ জন সদস্য সীমান্ত পেরিয়ে পালিয়ে এসে আশ্রয় নিয়েছে বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড বিজিবির একটি ফাঁড়িতে। আশ্রয় নেয়া মিয়ানমার বর্ডার গার্ড পুলিশের দুই জন সদস্য গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয়েছে বলে জানা গেছে।

আজ রবিবার সকাল থেকে নাইকংছড়ি ও উখিয়ার পালংখালী সীমান্তের ওপারে থেমে থেমে গোলাগুলির শব্দ ভেসে আসছে এপারে। এতে আতংকে রয়েছে সীমান্ত এলাকার বাসিন্দারা। ঘুনধুমের তুম্ব্রু এলাকার অনেকই ঘর বাড়ি ও দোকানপাট বন্ধ করে নিরাপদে সরে পড়েছে।

নাইকংছড়ির ঘুনধুম সীমান্ত এলাকা থেকে পাওয়া খবরে জানা গেছে শনিবার রাতে সীমান্তের ওপারে মিয়ানমার বর্ডার গার্ড পুলিশের ৩৪ নম্বর রাইট ক্যাম্প দখলে নিতে আরাকান আর্মি হামলা চালায়। এরপর শুরু হয় দুপক্ষের মধ্যে তীব্র লড়াই। মুহুর্মুহু গোলাগুলি ও মর্টার শেলের যুদ্ধের এক পর্যায়ে রাতের আঁধারে মিয়ানমার বর্ডার গার্ড পুলিশের ১৪ জন সদস্য বাংলাদেশে পালিয়ে এসে বিজিবির তুমব্রু ফাঁড়িতে আশ্রয় নেয়। তবে বিজিবির দায়িত্বশীল কোন কর্মকর্তা মিয়ানমার বর্ডার গার্ড পুলিশের আশ্রয় নেয়ার বিষয়টি স্বীকার করেনি।

এদিকে ওপারে দুপক্ষের মুহুর্মুহু গোলাগুলি ও মর্টার শেলের শব্দে ঘুনধুম ইউনিয়নের সীমান্ত লাগোয়া কয়েকটি গ্রামের বাসিন্দাদের মধ্যে আতংক দেখা দেয়। অনেকই এসময় নিরাপদে দুরের বাড়ীতে আশ্রয় নেয়। রাতে মিয়ানমারের ছোড়া মর্টার শেলের অংশ কোনারপাড়া গ্রামের ইলিয়াস হোসেনের বসতঘরের টিনের চালে এসে পড়ে। এটি টিনের চাল ভেদ করে ঘরের ভেতরে গিয়ে পড়ে। তবে এতে কোন হতাহত হয়নি বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। এর আগে শনিবার বিকেলে ওপারে হওয়া গোলাগুলির এক পর্যায়ে ঘুমধুম ইউনিয়নের তুমব্রু সীমান্তে সড়কে সিএনজি গাড়িতে এসে পড়েছে মিয়ানমার থেকে ছোঁড়া বুলেট। এতে ওই সিএনজির সামনের গ্লাস ফেটে যায়। তবে অক্ষত আছেন সিএনজি অটোরিক্সার চালক।

ঘুনধুম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আজিজ জানান শনিবার বিকেলে এবং রাতে সীমান্তের ওপারে রাখাইনের তুমব্রু রাইট পিলার ক্যাম্প এলাকা থেকে এলোপাতাড়ি ফায়ারিং এর বিষয়টি স্বীকার করলেও বিস্তারিত জানাতে অস্বীকার করেন। তিনি জানান সীমান্ত সংলগ্ন গ্রামবাসীরা ওপারের দুপক্ষের লড়াইয়ে আতংকে রয়েছে।

উখিয়ার পালংখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গফুর উদ্দিন জানিয়েছেন শনিবার ও আজ রবিবার সকাল থেকে সীমান্ত সংলগ্ন এলাকায় তীব্র গোলাগুলির শব্দ শুনা যাচ্ছে।

গ্রামবাসীরা জানান, গতকাল শনিবার বিকেল ও রাতে ওপারে কয়েক হাজার রাউন্ড গুলিবিনিময় এবং মর্টার শেল নিক্ষেপ করা হয়েছে।

সীমান্তের বিভিন্ন সূত্র বলছে, মিয়ানমারের রাখাইনে চলমান সংঘাতে নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারের ক্ষমতাসীন জান্তা বাহিনীর প্রায় সব ক্যাম্প দখল করে নিয়েছে সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠি আরাকান আর্মি। গতকাল শনিবার রাতে দখল করেছে তুমব্রু ৩৪ নম্বর রাইট ক্যাম্প।

সীমান্তের ওই এলাকায় মাত্র কয়েকটি ক্যাম্প দখলে আছে মিয়ানমার জান্তা বাহিনীর। এর মধ্যে ঢেকিবুনিয়া ক্যাম্প উল্লেখযোগ্য। এই ক্যাম্পগুলো দখলে নেওয়ার চেষ্টা করেছে আরাকান আর্মি।

স্থানীয়রা বলছেন, এই ক্যাম্পগুলোর অবস্থান সীমান্ত ঘেঁষা। ক্যাম্পগুলোর এপারের সীমান্তে প্রচুর বাংলাদেশী জনবসতি রয়েছে। ক্যাম্পগুলো দখলের জন্য গোলাগুলি হলেই এপারের সীমান্তে চলে আসবে। হতাহতের ঘটনাও ঘটবে।

ভয়েস/জেইউ।

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023
Developed by : JM IT SOLUTION